ছবি: হীরেন পণ্ডিত
মুক্ত এবং স্বাধীন গণমাধ্যম গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। নাগরিকদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের তথ্য জানার পাশাপাশি তাদের নেতাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষার মাধ্যমে আমরা আমাদের গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার রক্ষার মূল্যবোধকে সম্মিলিতভাবে সমুন্নত রাখি।
গণমাধ্যম সুশাসনকে সহায়তা করা ও জনসাধারণকে একটি বিষয় সম্পর্কে পুরোপুরিভাবে অবহিত করা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করে। এছাড়াও সাংবাদিকদের অবশ্যই তথ্যে প্রবেশাধিকার থাকতে হবে এবং তথ্যের সূত্রগুলোর সুরক্ষা দিতে পারতে হবে।
গণতন্ত্র ও মুক্ত গণমাধ্যম নিয়ে আমাদের জাতীয় আন্তর্জাতিক সংস্থা এমনকি বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড লক্ষ্য করা যায়। এ সমস্ত জাতীয় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও ক্ষমতাধর দেশগুলো সবসময় তাদের নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মুক্ত গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের এক এক সময় এক রকম ব্যাখ্যা দেয়।
আমরাও মনে করি প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত দিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা সবার প্রত্যশা। এসব সংবাদ প্রকাশে কোন প্রকার বাধা সৃষ্টি করার কোনসুযোগ নেই। গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টন ও কাকরাইল মোড়ে পুলিশ-বিএনপির সংঘর্ষে পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী হামলার শিকার হয়েছিলে। দৈনিক সংবাদমাধ্যম ইত্তেফাক, সময় টিভি, যমুনা টিভি, কালবেলাসহ একাধিক গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। কাকরাইলে সংঘর্ষে ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অনেক সাংবাদিক। গুরুতর আহত হয়েছিলেন দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক। এগুলো নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন ভূমিকা আমরা লক্ষ্য করিনি এমনকি কোন বিবৃতিও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আহত হন ব্রেকিংনিউজের ক্রাইম রিপোর্টার, আক্রান্ত হোন ব্রেকিংনিউজের নিজস্ব প্রতিবেদক, ইনকিলাব পত্রিকার ফটোসাংবাদিকসহ আরও অনেকে। গলায় আইডিকার্ড ঝুলানো থাকলেও তাদেরকে এলোপাতাড়ি মারধর করা হয়। হামলায় অনেকের শরীর ক্ষতবিক্ষত হয়। এছাড়া অনেকের মোবাইল মোবাইল ফোনও ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা এগুলো নিয়েও মানবাধিকারকর্মীসহ মানবাধিকারের ফেরিওয়ালাদের কারো কোন উদ্বেগ লক্ষ্য করা যায়নি।
স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে একটি বিষয় স্পষ্টতই প্রতীয়মান হয়, রাজনৈতিক অঙ্গনে সহাবস্থানের বিষয়টি বরাবরই অনুপস্থিত বা দুর্বল ছিলো। এবার সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীরা ছিলেন আন্দোলনকারীদের আক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর অতর্কিত আক্রমণ, হাসপাতালে হামলার পাশাপাশি সাংবাদিকদের যেভাবে নির্যাতন-নিপীড়ন করা হয়েছে এবং পেশাগত দায়িত্বপালনে বাধা দেওয়া হয় তা নজীরবিহীন। তবে এটা ঠিক সাংবাদিক বা গণমাধ্যম কর্মীদের কাজ করা খুব সহজ সেটিও নয়। অনেক সময় রাজনৈতিক শক্তির প্রতিপক্ষই নয়, সমাজের প্রভাবশালীরাও সাংবাদিক ও গণমাধ্যম কর্মীদের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেন। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ২৮ অক্টোবর কমপক্ষে ৩০ জন সাংবাদিক বিভৎস আক্রমণের শিকার হয়েছেন, যে গণতান্ত্রিক অধিকারের কথা বিরোধী দল থেকে বারবার উচ্চারিত হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতার পক্ষে বুলি আওড়ান তারাই নিজেরা কতোটা এই বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ সেই প্রশ্নটা একবার নিজেদের করতে পারেন।
গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করবে, সেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আবার সেই সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। জনসাধারণের কথাই উঠে আসে গণমাধ্যমে। তাই এই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলে গণতন্ত্র সমুন্বত রাখা সম্ভব। গণমাধ্যমের দায়িত্ব হলো, তথ্য সংগ্রহ করা এবং তা জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ছাড়া গণতন্ত্র অচল হয়ে পড়ে।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একটি সাংবিধানিক অধিকার। জাতিসংঘের ১৯৪৮ সালের মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেকের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার রয়েছে। এই অধিকারে হস্তক্ষেপ ছাড়াই মতামত রাখা এবং কোনো গণমাধ্যমের মাধ্যমে তথ্য ও ধারণা অনুসন্ধান করা স্বাধীনতার সীমানা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।’ আমাদের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের ২-এর ধারায় উল্লেখ আছে, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হইল’, অর্থাৎ জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জায়গা যথেষ্ট পাকাপোক্ত, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
অন্যের মতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। মত প্রকাশের স্বাধীনতা জনগণের একটি মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের সংবিধানের ধারার ৩৯(১) চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নিশ্চয়তা দান করা হয়েছে এবং ৩৯(২) সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। আলোচনা, মতপ্রকাশ, ঐক্য হলো গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ সিঁড়ি। যেখানে গণমাধ্যম যত বেশি শক্তিশালী সেখানে গণতন্ত্র ততো বেশি শক্তিশালী।
হার্বার্ট স্পেন্সারের কথা মনে রাখতে হবে অন্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ না করে নিজের ইচ্ছামত চলাই কিন্তু স্বাধীনতা। একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন একটি প্রক্রিয়া। গণমাধ্যমের সুষ্ঠু চর্চা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নের সহায়ক হতে পারে। আধুনিক যুগে গণমাধ্যম একটি রাষ্ট্রের অন্যতম স্তম্ভ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। সমাজের ন্যায়-অন্যায়, অপসংস্কৃতি, কুসংস্কার, নাগরিকদের আশা, আকাক্সক্ষা, অধিকার, কর্তব্য, জনমত গঠন ও ভালো-মন্দের প্রতিফলন ঘটে গণমাধ্যমের কল্যাণে। একটি জাতির উন্নয়নের পথের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো গণমাধ্যম।
গণমাধ্যমের কাজ হলো এই জনগণের বার্তা নিরপেক্ষ ও নির্ভুলভাবে সরকারের কাছে তুলে ধরা। একটি দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আছে কি নেই এবং নাগরিকের চিন্তার স্বাধীনতার আছে কি নেই, তা দিয়ে সহজেই গণতান্ত্রিক পরিস্থিতি পরিমাপ করা সম্ভব। গণমাধ্যমের সমন্বয়হীনতা রোধ করা জরুরি। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক অর্জনের পেছনে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে এবং এখনো রাখছে। দেশ, জাতি, গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মানবাধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসনের নিশ্চিত করা জরুরি।
পিআইডির তথ্য থেকে জানা যায়, গণমাধ্যমের উন্নয়নে এ সময়ে নতুন দুই হাজারের বেশি পত্রিকা নিবন্ধিত হয়েছে; বেসরকারি খাতে নতুন ৪৪টি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদনসহ ২৮টি এফএম রেডিও এবং ৩২টি কমিউনিটি রেডিওকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দৈনিক, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক ও ষান্মাসিক মিলিয়ে মোট পত্রিকার সংখ্যা দুই হাজার ৮৫৫। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বিটিভি ওয়ার্ল্ড, সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র নিয়ে সরকারি চারটি ও অনুমোদনপ্রাপ্ত ৪৪টি বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন। পিআইডির প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানানো হয়েছে, ‘দেশের উন্নয়নকে টেকসই, গতিশীল ও অংশগ্রহণমূলক করতে অবাধ তথ্যপ্রবাহের কোনো বিকল্প নেই।
বর্তমান সরকারের এই অন্যতম মূলমন্ত্র বাস্তবায়নে কাজ করছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। উন্নয়নে জনগণের অংশগ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের গণমাধ্যমকে শক্তিশালী করার দৃঢ় প্রত্যয় সেই কাজেরই অংশ।’ গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার ইচ্ছে নেই। তবে যারা সরকারের উন্নয়নের অপপ্রচার করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। রামপাল নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যা হচ্ছে, ভারত নিয়ে মিথ্যাচার। রিপোর্টিংয়ের সততা থাকতে হবে। যেকোনো ধরনের সমালোচনাকে আমরা স্বাগত জানাই, তবে মিথ্যাচারকে নয়।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর মতে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে যখন এর অপব্যবহার হয়, তখন এটার পরিণাম হয় খুবই ভয়াবহ, এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের প্রসার ও এর স্বাধীনতার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। আমরা প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই, যারা বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করতে চায়। আমরা শুধু উন্নয়নই করতে চাই না, আমরা টেকসই উন্নয়ন করতে চাই, যেটা আমাদের পরিবেশকে সুরক্ষা দেবে।
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত উপরোক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে বলেন, ‘দেশের গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত। তবে যারা রাষ্ট্রের বিরোধিতা করছে, তাদেরকে সরকার নজরদারিতে আনতে চায়।’ তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করার কোনো ইচ্ছে সরকারের নেই। তবে যারা দেশের উন্নয়নের অপপ্রচার করবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় সরকার কমিটেড। গণমাধ্যম শুধু মুক্ত নয়, উন্মুক্ত। বরং সরকারকেই অনেক সাংবাদিক নিবন্ধনহীন অনলাইন বন্ধ করার কথা বলেন। গণমাধ্যম কর্মীদের তালিকা করতে বলে, কে কোথায় কাজ করে। আমরা কিন্তু সেটা করছি না। আমরা চাই একটা নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে সবাই আসুক। সুস্থ ধারার সাংবাদিকতায় কোনো বাধা নেই। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ব্যবহার করে যাতে আইনের অপব্যবহার না হয়, সে ব্যাপারে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
সঠিক তথ্য-উপাত্তের বিপরীতে ডকুমেন্টস থাকে, তার বিরুদ্ধে কথা বলার সুযোগ নেই। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা মানে কোনো নিজস্ব পারপাস সার্ভ করা নয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে যখন এর অপব্যবহার হয়, তখন এর পরিণাম হয় খুবই ভয়াবহ। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। গত ১৫ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণমাধ্যমের প্রসার ও এর স্বাধীনতার জন্য ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকার অঙ্গিকারবদ্ধ। আমরা প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ। পরিবেশকে সুরক্ষিত করতে চাই। সরকার সব সময় সমালোচনাকে স্বাগত জানায়। কিন্তু যখন সিস্টেমেটিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন হয়, আমরা সেটার বিরুদ্ধে। পরিবেশ বিপর্যয় কিংবা দুর্নীতি নিয়ে যেকোনো প্রতিবেদনকে স্বাগত জানাই। আমি এখনো বলে যাচ্ছি, এই ধরনের সাংবাদিকতা রক্ষায় সঙ্গে আছি।’
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সুচকে পিছিয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) ২০২৩ সালের মে মাসে যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে ভুল তথ্য আছে এবং সেখানে বাস্তবতার প্রতিফলন ছিল না। ওয়েবসাইটে ভুল, অর্ধসত্য ও অপর্যাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশকে ১৬৩তম দেখানো হয়েছে। এটা নিয়ে আমরা চিঠি লিখেছি, তারা ভুল তথ্য ডিলিট করেছে। কিন্তু র্যাংকিং ঠিক করা হয়নি।’
সংবাদ প্রকাশের জেরে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলা, মামলা বা হয়রানির ঘটনা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেক সময় শুধু সংবাদ সংগ্রহ বা সংবাদের জন্য সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছেন এর সংখ্যা খুব বেশি নয় বেশিলভাগ ব্যক্তিগত দ্ব›দ্ব ও পারিবারিক শত্রæতার জেরে। পাশাপাশি সাংবাদিকদের তথ্য পাওয়ার সুযোগও দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে এই অভিযোগও ঠিক নয় সরকারের সব তথ্য এখন ওয়েবসাইটে দেয়া অছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রবেশ আটকাতে এবং তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে চলছে নানা তৎপরতা এই অভিযোগ সঠিক নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে অলিখিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে, তবে এটাও সত্য বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সংবেদনশীল জায়গা। ২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইনে স্পষ্ট বলা আছে কোন তথ্য দেওয়া যাবে কোনটা যাবেনা।
তথ্য প্রদানের জন্য সব সরকারী, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে একজন তথ্যপ্রদানকারী কর্মকর্তা রয়েছে। যে কারণে তথ্য অধিকার আইন করে অনেক বেশি লাভ হয়েছে। তথ্য পাওয়া নাগরিক অধিকার। জনগণের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহিতা আছে। এটি নিশ্চিতে সাংবাদিক প্রবেশে কোথাও নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে সংবেদনশীল অফিস ও তথ্যগুলো সবাইকে সেদিক থেকেই ভাবতে হবে।
সরকারি, আধা সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত দপ্তর এমনকি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানেও পেশাগত কাজে প্রবেশ করতে কোন বাধা নেই। সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাংবাদিকদের প্রবেশ একটি শৃঙ্খলার মধ্যে আনা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে কেউ যখন তথ্য চাইবেন, তা পাওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে। তথ্য পাওয়া নাগরিক অধিকার। জনগণের কাছে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর জবাবদিহি আছে, সেভাবেই সকলকে কাজ করতে হবে।
হীরেন পণ্ডিত: প্রাবন্ধিক, গবেষক ও কলামিস্ট
ইউ