ঢাকা,

১০ জানুয়ারি ২০২৫


লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে পুড়েছে ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ, চলছে লুটপাট

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৩:০১, ১০ জানুয়ারি ২০২৫

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানলে পুড়েছে  ৫০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ, চলছে লুটপাট

ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস শহর। বিনোদন জগতের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত  শহরটির চারপাশে একাধিক দাবানল এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

ইতোমধ্যে পাঁচজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে এবং প্রায় ৭০ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।  

দাবানলে বিপর্যস্ত শহরে লুটপাটের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত লুটপাটে জড়িত ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসে এই দাবানলের সূত্রপাত হয়। প্রচণ্ড গতিতে বয়ে চলা ঝড়ে দাবানল চারিদিকে হুহু করে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের বরাতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেখানে ছয়টি আলাদা দাবানল সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে প্যাসিফিক প্যালিসেডস, ইটন, এবং হার্স্ট এলাকায় প্রচণ্ড বাতাসের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।  দাবানলের কারণে হলিউডের নানা অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। তারকাদের প্রিয় প্যাসিফিক প্যালিসেডস এলাকা ও আশপাশের বহু বিলাসবহুল বাড়ি আগুনে পুড়ে গেছে।  

আগুনে এখন পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেসে প্রায় দুই হাজার অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে। এর মধ্যে শতকোটি ডলারের বাড়িও রয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে অন্তত ৩ লাখ ১১ হাজার বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।

আগুন নেভাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরিয়ে নেওয়া বাসিন্দাদের জন্য বিভিন্ন এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে এবং অবসরপ্রাপ্ত অগ্নিনির্বাপক কর্মীদেরও ডাকা হয়েছে।

এরই মধ্যে শহরটির এখন পর্যন্ত ৫০ বিলিয়ন (৫ হাজার কোটি) ডলারের ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছে আবহাওয়াবিষয়ক তথ্য সরবরাহকারী ওয়েবসাইট অ্যাকুওয়েদার।

অ্যাকুওয়েদারের প্রধান আবহাওয়াবিদ জোনাথন পোর্টার বলেন, অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক ক্ষতির দিক দিয়ে এই দাবানল ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড হতে যাচ্ছে। এই আগুনের ফলে অনেক ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে, লোকজন চাকরি হারাবে, আর ধোঁয়ার প্রভাবে চিকিৎসা খরচ বাড়বে।

এদিকে শহরটিতে লুটপাটে ব্যস্ত দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বোর্ড অব সুপারভাইজারদের প্রধান ক্যাথরিন বার্জার বলেছেন, আগুন থেকে বাঁচতে অনেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। দুর্বৃত্তরা পরিত্যক্ত ওই বাড়িগুলোয় লুটপাট চালাচ্ছে।  

লুটপাটে জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।  

আগুন নেভানোর কার্যক্রমের বর্ণানায় লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারন বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করেন।  

তিনি বলেন, আগুন নেভাতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ছয় অঙ্গরাজ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের ক্যালিফোর্নিয়ায় আনা হয়েছে। তাছাড়া উত্তর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে ২৫০টি ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি এবং ১ হাজার সদস্য দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় গেছেন।  

তবে এই আগুন নেভানোর মতো যথেষ্ট সংখ্যক কর্মী নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় পানিসংকটের কারণেও আগুন নেভাতে সমস্যা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় হেলিকপ্টারও আগুন নেভানোর কাজ চলছে।  

এই খবর বেজায় চটেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ক্যালিফোর্নিয়ার সরকারকে অযোগ্য বলে ক্ষোভ ঝেড়েছেন তিনি।  

এদিকে তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আগুন নেভাতে যা যা দরকার সব করবে সরকার।  

তথ্যসূত্র: রয়টার্স

টিএইচ

News