গাজায় ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানাল বাংলাদেশ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন আবারও শুরু হওয়ায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

বুধবার (১৯ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ ও নিন্দা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসন পুনরায় শুরু হওয়া নিয়ে বাংলাদেশ সরকার অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এই হামলায় বিশেষ করে শিশু ও নারীদের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে এবং সংকটাপন্ন অঞ্চলের মানবিক পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। এই সহিংসতার নতুন চক্র আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি গুরুতর অবহেলার প্রমাণ।

বাংলাদেশ সরকার ঘনবসতিপূর্ণ বেসামরিক এলাকাগুলোতে নির্বিচারে বিমান হামলার নিন্দা জানায়, যা মানবিক দুর্ভোগকে আরও বাড়িয়েছে এবং নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর বিপর্যয়কর প্রভাব ফেলেছে। বাংলাদেশ অবিলম্বে সব সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলের প্রতি সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন এবং আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর অনুরোধ জানিয়েছে।

এছাড়া, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, তারা যেন অবিলম্বে সংঘাত বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়, বেসামরিক মানুষের জীবন রক্ষা করে এবং গাজার অবরুদ্ধ জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা নির্বিঘ্নে সরবরাহ নিশ্চিত করে।

ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীনতার প্রতি বাংলাদেশ তার নীতিগত অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে, যার মধ্যে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অধিকার অন্তর্ভুক্ত।

মধ্যপ্রাচ্যে ন্যায্য, স্থায়ী ও টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পুনরায় সংলাপ শুরুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে বাংলাদেশ, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি হতে পারে। ফিলিস্তিনি জনগণের উপর চলমান সহিংসতা ও দুর্ভোগের অবসান ঘটাতে কূটনীতি ও শান্তিপূর্ণ উপায়কে অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘের প্রস্তাবসমূহ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের শান্তি, মর্যাদা ও ন্যায়বিচারের আকাঙ্ক্ষার আলোকে ফিলিস্তিন সমস্যার একটি স্থায়ী ও ন্যায্য সমাধান অর্জনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সেহরির সময় ইসরায়েল এক তরফা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় নির্বিচারে বিমান হামলা চালায়, যাতে চার শতাধিক মানুষ নিহত হন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।