‘মেছো বিড়াল সংরক্ষণ পরিবেশ রক্ষার জন্য জরুরি’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, মেছো বিড়াল সংরক্ষণ শুধু প্রাণী অধিকার নয়, এটি পরিবেশ রক্ষার জন্যও অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, ‘প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীই গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের সংরক্ষণ আমাদের দায়িত্ব।’ তিনি আরো জানান, মেছো বিড়ালকে মুরগি খাওয়ার অজুহাতে হত্যা করা একেবারেই অন্যায়, এবং এটি চলতে থাকলে এই প্রজাতি বিলুপ্তির ঝুঁকিতে পড়বে। তাই জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বন অধিদপ্তরে অনুষ্ঠিত বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসকরা মেছো বিড়াল সংরক্ষণে সচেতনতা কার্যক্রম চালাচ্ছেন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এতে সম্পৃক্ত করা হবে। তবে প্রকৃতপ্রেমীদের অংশগ্রহণই সবচেয়ে কার্যকর হবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘গণমাধ্যম শুধু দুঃখপ্রকাশ নয়, মেছো বিড়ালের পরিবেশগত গুরুত্বও তুলে ধরতে হবে।’

এছাড়া, তিনি জেলা প্রশাসকদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক সচেতনতা বাড়াতে সাহায্য করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মেছো বিড়াল ছাড়াও, সব বিপন্ন প্রাণী রক্ষায় আমাদের আরও কঠোর হতে হবে। নিষ্ঠুরতা বন্ধ করতে হবে এবং অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

পরিবেশ উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘আইনের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়িত্ববোধ বাড়ে। কার্যকর বনায়ন পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ সংকট কাটানো সম্ভব।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। সভাপতিত্ব করেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান, প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম. মনিরুল এইচ. খান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মো. ফজলে রাব্বী।

অনুষ্ঠানের শেষে, মেছো বিড়াল সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়াতে অনুষ্ঠিত পোস্টার ডিজাইন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়া, মেছো বিড়াল সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির জন্য একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয়।