
কানাডায় নির্বাচন শেষে ভোট গণনা চলছে। চূড়ান্ত ফলাফল আসতে কিছুটা সময় লাগলেও, দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন লিবারেল পার্টির সদর দপ্তরে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিবিসি জানিয়েছে, নতুন সরকার গঠন করার জন্য লিবারেল পার্টি পর্যাপ্ত সংখ্যক আসনে জয় পেতে যাচ্ছে।
সিবিসি বলছে, গতকাল ভোটগ্রহণ শেষে এখনও ভোট গণনা চলছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে যেকোনো দলকে ১৭২টি আসন দরকার। কানাডার ৩৪৩ আসনের হাউস অব কমন্সে লিবারেল পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, নাকি তাদের সংখ্যালঘু সরকার গঠন করতে হবে, তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। তবে, বেশিরভাগ বিশ্লেষকের মতে, মার্ক কার্নিই আগামী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। বিবিসির রিপোর্ট অনুযায়ী, লিবারেল পার্টি ১৫৬টি আসনে এগিয়ে রয়েছে।
কনজারভেটিভ পার্টি, প্রতিদ্বন্দ্বী দল, ১৪৭টি আসনে এগিয়ে রয়েছে, তবে তারা এখনও পিছিয়ে নেই। এর আগে গত রবিবার ইপসোসের করা এক জরিপে, লিবারেল দল ৪২ শতাংশ ও কনজারভেটিভ দল ৩৮ শতাংশ জনসমর্থন পেয়েছিল।
গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনটি ছিল একটি বদলে যাওয়া রাজনৈতিক পরিবেশে, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপ এবং কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করার ইচ্ছা নির্বাচন পূর্ববর্তী প্রধান আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল।
ট্রাম্পের এমন মন্তব্য কানাডায় দেশপ্রেমের নতুন ঢেউ তৈরি করেছে, যা লিবারেল পার্টির প্রার্থী মার্ক কার্নির প্রতি জনসমর্থন বাড়াতে সহায়তা করেছে।
নির্বাচনের আগে, ট্রাম্পের হুমকি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে কানাডার সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা দেশটির জনগণের মধ্যে এক ধরণের জাতীয়তাবাদী অনুভূতি সৃষ্টি করেছে।
ভোটের দিনেও ট্রাম্পের মন্তব্য
ভোটের দিন সকালে, ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে জানান, ‘যদি কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হয়, তবে তারা শূন্য শুল্কের সম্মুখীন হবে।’
এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পলিয়েভর এক্সে লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আমাদের নির্বাচন থেকে দূরে থাকুন। কানাডা সবসময় গর্বিত, সার্বভৌম ও স্বাধীন দেশ থাকবে এবং আমরা কখনো ৫১তম অঙ্গরাজ্য হব না।’
এই ছাড়া, নির্বাচনী প্রচারণার সময়, ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক মন্তব্যের বিরুদ্ধে পলিয়েভর মুখে কিছু বলেননি, যার কারণে তাকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে।
তবে, মার্ক কার্নি এক্সে ট্রাম্পের পোস্টের বিরুদ্ধে কড়া জবাব দেন, লিখে বলেন, ‘এটা কানাডা, এখানে কী হবে, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নেব।’
মার্ক কার্নির নতুন শুরু
মার্ক কার্নি, যিনি রাজনীতিতে একটি নতুন মুখ, তিনি আগে কখনও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি। কানাডা ও যুক্তরাজ্যের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান হিসেবে কাজ করার পর, তিনি গত মাসে জাস্টিন ট্রুডোর পদত্যাগের পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
এই নির্বাচনে তার নেতৃত্বে লিবারেল পার্টির অগ্রগতি এবং ট্রাম্পের হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ প্রমাণ করেছে যে কানাডার জনগণ তাদের স্বাধীনতার প্রতি দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।
সূত্র : বিবিসি ও এএফপি।
টিএইচ