ঢাকা,

২২ ডিসেম্বর ২০২৪


বার্ষিক সাধারণ সভা করল বিআইজেএফ

মাজহারুল ইসলাম মিচেল

প্রকাশিত হয়েছে: ০২:০৫, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

বার্ষিক সাধারণ সভা করল বিআইজেএফ


সদস্যদের প্রাণবন্ত ও স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের পেশাজীবী সাংবাদিকদের নিবন্ধিত সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা।

সভায় দ্বিতীয়বার নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন, কল্যাণ তহবিল কমিটি গঠন ও আগামী ডিসেম্বরে ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে ২০২২-২০২৪ মেয়াদের কার্যনির্বাহী কমিটি।

সভায় জানানো হয়, দ্রুত নির্বাচন কমিশন গঠন ও কমিশনকে সহায়তায় নির্বাহী কমিটি থেকে কমিটি গঠন করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ ভিশন ২০২১ টাওয়ারের সম্মেলন কেন্দ্রে বিআইজেএফ সভাপতি নাজনীন নাহারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সহসভাপতি ভূঁইয়া মোহাম্মাদ ইনাম লেনিন।

বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে সদস্যদের উদ্দেশে সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান বলেন, কোষাধ্যক্ষের পদকে সক্রিয়, কার্যকর ও দৃশ্যমান করার মাধ্যমে সাধারণ সদস্যদের কাছে আর্থিক স্বচ্ছ্বতার বিষয়টি সুস্পষ্ট করার সঙ্গে নিয়মিত কার্যক্রম সম্পাদনের সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়ন, ইন্ডাস্ট্রির ইনক্লুশনে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি সচেষ্ট ছিল। নির্বাহী কমিটির নিয়মিত মাসিক সভা, বৈঠকের সিদ্ধান্ত নথিভুক্ত, আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছ্বতা, সদস্যপদ প্রদানে সংগঠনের গঠনতন্ত্রের সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমকে অংশগ্রহণমূলক করা হয়েছে।

সাব্বিন হাসান উল্লেখ করেন, প্রথমবার দেশে ই-বর্জ্য দিবস পালন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন ও পরিবর্তন-বিষয়ক সংসদীয় আয়োজনে অংশীজন হয়ে মত প্রকাশের মতো জাতীয় ইস্যুতে অংশগ্রহণ, সমস্যায় সহযোগী হয়ে সদস্যদের জন্য প্রতিবাদ, বন্যার্তদের পাশে দাড়াঁনো ছাড়াও সদস্যদের দক্ষতা উন্নয়নে নেওয়া প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। দেশে প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।

সাধারণ সদস্যদের উদ্দেশে (জুলাই-২০২৩ থেকে জুন-২০২৪) অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর করেন কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম। বর্তমান কমিটি আর্থিক লেনদেনে শতকরা ৯০ ভাগ কার্যক্রম ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পাদন করা, সব ধরনের হিসাব-নিকাশ যথাযথ প্রক্রিয়ায় লিপিবদ্ধ করা ও আর্থিক লেনদেনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও প্রমাণাদি সংরক্ষিত আছে বলে কোষাধ্যক্ষ অবহিত করেন।

সভায় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরমান, প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক আসাদুজ্জামান, কার্যনির্বাহী সদস্য ইমদাদুল হক ও এনামুল হকসহ সংগঠনদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য অংশ নিয়েছেন। সদস্যদের কণ্ঠভোটে উত্থাপিত আর্থিক প্রতিবেদন, কল্যাণ তহিবল কমিটি ও নিরীক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানের নাম সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।

বিবিধ আলোচ্যসূচিতে সংগঠনের কিছু বিষয়সহ অনুষ্ঠেয় নির্বাচন বিষয়ে উন্মুক্ত মত প্রকাশ করেন সদস্যরা। সংগঠনের স্বার্থ সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। সংগঠনের গঠনতন্ত্রের নিয়ম অনুসারে যারা নিয়মিতভাবে তথ্যপ্রযুক্তি বিটে সাংবাদিকতা করছেন, এমন সাংবাদিকদের সদস্যপদ দেওয়া, সংগঠনের গতিশীলতা বাড়াতে উপকমিটি গঠন করে তাদের সক্রিয় করা, সদস্যদের সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সময়োপযোগী বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করা, দুই বছরের শুরুতেই পুরো মেয়াদের সব কার্যক্রমের কর্মসূচির পরিকল্পনা করা, বর্তমান নির্বাহী কমিটি আর্থিক লেনদেনে যে স্বচ্ছ্বতা দেখিয়েছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় গঠনমূলক মতামত দেন সদস্যরা।

সভাপতি নাজনীন নাহার বলেন, ২০২২ সালে শতভাগ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব গ্রহণের পর মূল লক্ষ্য ছিল স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণে গণতান্ত্রিক চর্চা ও সদস্যদের মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করা। সদস্য কল্যাণে কাজ করা। দুই বছরে চেষ্টা করেছি আর্থিক বিষয়কে যথাযথ নিয়মতান্ত্রিক ও সাংবিধানিকভাবে পরিচালনা করার। সদস্যপদ প্রদান থেকে শুরু করে  সব সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে সংবিধানকে ও কার্যনির্বাহী সদস্যদের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতকে গুরুত্ব দিয়েছি। সব বিষয়ে সদস্যদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিতে সাংগঠনিক ফেসবুক পেজ ছিল নিয়ন্ত্রণমুক্ত। জবাবদিহিতা নিশ্চিতে দু বছরে দুটি বার্ষিক সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। সব উদ্যোগে সদস্যদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

সভাপতি বলেন, সদস্যদের আন্তরিক সহযোগিতায় ২১ বছরের সংগঠনের প্রথমবার কল্যাণ তহবিল গঠন করেছি। কমিটি চেষ্টা করেছে সাংগঠনিকভাবে গণতান্ত্রিক চর্চাকে সক্রিয় রাখতে। প্রত্যাশা করছি, আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে। নির্বাহী কমিটির প্রতিটি পদ ও সদস্যকে সক্রিয় ও কার্যকর করাই ছিল আমাদের লক্ষ্য। বিআইজেএফকে সাংগঠনিকভাবে সুসংগঠিত ও সুদৃঢ় করতে নিরলস পরিশ্রম করেছে ইসি। ভবিষ্যতে নির্বাহী কমিটিতে যারা আসবেন, তারা এমন ধারাবাহিকতা রক্ষা করবেন বলে প্রত্যাশা রাখছি। বর্তমান কমিটির এটি শেষ আয়োজন। দ্রুতই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

News