
ছবি সংগৃহীত
রাষ্ট্র কাঠামোর গুণগত ও মৌলিক সংস্কার ছাড়া দেশে গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়—এমন অভিমত জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে সেই পরিবর্তনের পথ তৈরির আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আয়োজিত এক সংলাপে সূচনা বক্তব্যে এই আহ্বান জানান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ। এই দলের মূল শক্তি দেশের তরুণ সমাজ। আমরা চাই, একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে উঠুক—যেখানে ফ্যাসিবাদ বিলুপ্ত হবে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘এই গণঅভ্যুত্থান কারও ব্যক্তিগত ক্ষমতা পরিবর্তনের আন্দোলন নয়। এটি ছিল একটি মূলগত রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা। জনগণ শুধু সরকার পরিবর্তন চায় না, চায় রাষ্ট্র ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অতীতে ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান দেখেছি। কিন্তু জনগণের সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বারবারই তা ভেস্তে গেছে। এই ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায়ই দেশে দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থান একটি নতুন রাজনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। সেই আন্দোলনে দেশের মানুষ একটি ফ্যাসিস্ট শাসককে বিদায় করতে পেরেছে। হাজারো মানুষের শাহাদাত ও ত্যাগের বিনিময়ে আজকের এই বাস্তবতা এসেছে। এই বাস্তবতা ব্যর্থ হলে জাতি হিসেবে আমরা আরেকটি ঐতিহাসিক ভুল করব।’
এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা যে সংস্কারের কথা বলছি, তা হচ্ছে মূলত সংবিধান, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা, বিচার ব্যবস্থা ও নির্বাচন ব্যবস্থার কাঠামোগত পরিবর্তন। অতীতে সংবিধানে এমন কিছু ধারা রাখা হয়েছিল, যা ব্যক্তি কেন্দ্রীক শাসনকে শক্তিশালী করেছে। এই কাঠামো ঠিক না করলে যে-ই ক্ষমতায় আসুক না কেন, স্বৈরতন্ত্র ফিরে আসবে।’
সংলাপে নাহিদ ইসলাম জানান, ঐকমত্য কমিশনের পাঠানো বেশিরভাগ সুপারিশের সঙ্গেই এনসিপি একমত। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কেবল কসমেটিক নয়, বাস্তব ও কার্যকর সংস্কার চাই।’
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্র সংস্কার, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একটি কার্যকর নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
ইউ