ছবি: বিজনেস আই
ছাত্রদল নেতার কাছ থেকে বাড়ির নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় না করায় নরসিংদীর ভাটপাড়ায় এক স্কুল শিক্ষককে মারধর করেছে। এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। ফলে সড়কের উভয় পাশে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে প্রায় দশ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের ভাটপাড়া বাজারে পাঁচদোনা-টঙ্গী আঞ্চলিক সড়ক এ অবরোধের ঘটনা ঘটে। এসময় বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে সাবেক শিক্ষার্থীরা ও অংশ নেয়। আইন শৃংখলা বাহিনির সদস্য সহা সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। পরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। শিক্ষক ময়নাল হোসেন নরসিংদীর ভাটপাড়ায় এনসি গুপ্ত হাই স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক।
অভিযুক্ত জুয়েল ঘোষ পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সভাপতি প্রার্থী।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ভাটপাড়া এনসি গুপ্ত হাই স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ময়নাল হোসেন বাড়ি নির্মাণ করছেন। এই বাড়ি নির্মাণ কাজে পাঁচদোনা ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সভাপতি প্রার্থী জুয়েল ঘোষ বাড়ি নির্মাণের কাজের সামগ্রী সরবরাহ করতে চাইছিলেন কিন্তু ময়নাল হোসেন তাতে রাজি হয়নি। এতে জুয়েল ক্ষিপ্ত হয়। পরে ৯ জানুয়ারি (বৃহস্পতিবার) সকালে শিক্ষক ময়নাল তার ছেলেকে নিয়ে মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে জুয়েলের নেতৃত্বে সোহাগ, ফরিদ মিয়া ও রিপনসহ অঞ্জাতরা ময়নাল হোসেনের উপর হামলা করে। এসময় তাকে ও ছেলেকে মারধর করে। পরে বিষয়টি বিদ্যালয়ে জানালে শিক্ষকরা স্থানীয় ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে ময়নাল হোসেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মাধবদী থানার লিখিত অভিযোগ দেয় করেন। অভিযোগ দিলেও এখন পযর্ন্ত জুয়েলের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হয়নি।
এরই প্রতিবাদে রোববার সকালে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের উপর হামলার বিচারের দাবিতে সড়কে নেমে আসেন। তারা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবি জানায়। বেলা ১১টার দিবে শিক্ষার্থীরা গাছের খণ্ড, টায়ার জ্বালিয়ে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। এতে সড়কের উভয় পাশে প্রায় দশ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। পরে দুপুর ২ টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে সেনাবাহিনী অভিযুক্তকে গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়। পরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
ভুক্তভোগী সিনিয়র শিক্ষক ময়নাল হোসেন বলেন, ‘আমি এখনো নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। আবার কখন আমার উপর হামলা হয়। আমি বাড়ি নির্মাণের কাজ করছি। জুয়েল এসে আমাকে বলে তার কাছ থেকে ইট বালু সিমেন্ট রড এগুলা নিতে হবে। আমি তাকে বলি যে সব মালামাল লাগবে আমি মোটামুটি সবগুলো এনেছি। পরবর্তীতে যা লাগবে তোমার থেকে নিব। তারপরও আমার ৯ বছরের ছেলেসহ আমার উপর হামলা করে মারধর করে। আমি এর বিচার চাই।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা জানান, ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু স্থানীয়ভাবে কোন সূরাহ না পাওয়ায় বিচারের দাবিতে আজকে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি। আর কোন শিক্ষক যেন অন্যায় ভাবে নির্যাতনের শিকার না হয় সেই দাবিও জানান তিনি।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় অভিযোগের পর আমরা রাতভর আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
ইউ