
ছবি সংগৃহীত
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যক্রমে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অবস্থিত বিসিবির কার্যালয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেন দুদকের তিন সদস্যের একটি দল।
অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানান, তারা মোট তিনটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালান। অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম দশ আসরের টিকিট বিক্রিতে আয়ের অস্বচ্ছতা, মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে অর্থ আত্মসাত, এবং বিভিন্ন লিগে খেলোয়াড় বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম।
আল আমিন বলেন, “মুজিববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালায় বিসিবি ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখিয়েছে, অথচ বাস্তব খরচ হয়েছে মাত্র ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার গরমিল থাকতে পারে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া, টিকিট বিক্রির প্রায় ২ কোটি টাকার হিসাব দেখানো হয়নি।”
বিপিএলের টিকিট বিক্রির আয়ে অস্বাভাবিকতা প্রসঙ্গে দুদক জানায়, একাদশ আসরে বিসিবির আয় ছিল ১৩ কোটি টাকা, যেখানে আগের আট আসরে সর্বমোট আয় ছিল ১৫ কোটি টাকা। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে যাচাই-বাছাই চলছে।
এছাড়া, বিসিবির তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ক্লাব নিবন্ধন ফি ৭৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করার পর অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। দুদক মনে করছে, এই পরিবর্তনের পেছনে কোনো আর্থিক কারসাজি থাকতে পারে। বিষয়টি নিয়েও রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে।
দুদক কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করে কমিশনের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। এরপর কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
এ বিষয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, “দুদকের অনুসন্ধানে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছি এবং করবো। বিসিবি সবসময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পক্ষে।”
দুদকের এই অভিযান দেশের ক্রীড়াঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তদন্তে কী ফলাফল আসে, তা নিয়ে কৌতূহল বেড়েছে ক্রীড়ামোদী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।
ইউ