ঢাকা,

২০ এপ্রিল ২০২৫


বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৫:৫৩, ১৪ এপ্রিল ২০২৫

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা

ছবি সংগৃহীত

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ওপর নতুন সময়সীমায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিবছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিন দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকবে। চলতি বছর এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে আজ (১৪ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাত থেকে।

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রীষ্মের এই সময়টি সামুদ্রিক মাছের, বিশেষ করে ইলিশের প্রধান প্রজননকাল। মাছগুলো উপকূলীয় এলাকায় ডিম ছাড়ে, আর সে সময় অতিরিক্ত মাছ ধরলে প্রজনন ব্যাহত হয় এবং ভবিষ্যতে মাছের উৎপাদন হ্রাস পায়। ২০১৫ সাল থেকে এমন আশঙ্কা থেকে সরকার এই গ্রীষ্মকালীন নিষেধাজ্ঞা চালু করে।

পটুয়াখালীর মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, “এই সময় সামুদ্রিক মাছগুলো নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে ও বংশবৃদ্ধি করতে পারে। দুই দেশের সমন্বিত এই নিষেধাজ্ঞা বঙ্গোপসাগরের মৎস্যসম্পদ রক্ষায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।”

তবে নিষেধাজ্ঞার সময় উপকূলের জেলেদের জীবিকা অনিশ্চয়তায় পড়ে। গলাচিপার এক জেলে বলেন, “নিষেধাজ্ঞা হলেই আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সরকার চাল দেয় বললেও অনেক সময় তা পাওয়া যায় না, আবার দেরিও হয়। যারা সত্যিকারের জেলে, তারাই অনেক সময় বঞ্চিত হয়।”

স্থানীয় মৎস্যজীবী সংগঠনগুলোর দাবি, সহায়তার তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি রয়েছে। প্রকৃত জেলে বাদ পড়লেও অনেক সময় সুবিধা পান রাজনৈতিক সংযোগধারীরা।

বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞা একটি সময়োপযোগী ও বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত হলেও এটি কার্যকর রাখতে জেলেদের সঠিকভাবে তালিকাভুক্ত করা, সময়মতো খাদ্য সহায়তা প্রদান এবং বিকল্প জীবিকার সুযোগ নিশ্চিত করাও জরুরি।

এ বছর বাংলাদেশের পাশাপাশি প্রতিবেশী ভারতও ১৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত তাদের জলসীমায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ফলে পুরো অঞ্চলেই এ সময় মাছ ধরা কার্যত বন্ধ থাকবে।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রজনন মৌসুমে মাছ ধরা বন্ধ রাখলে ইলিশের উৎপাদন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়।

নিষেধাজ্ঞার ফলে একদিকে যেমন সাগর বিশ্রাম পাচ্ছে, তেমনি বিশ্রামের দরকার উপকূলবাসীর দুশ্চিন্তাগ্রস্ত জীবনেও—তাদের পাশে থাকা এখন সময়ের দাবি।

ইউ

News