ঢাকা,

১৬ মার্চ ২০২৫


মাদক বিক্রির অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ নরসিংদী ডিবির ওসির বিরুদ্ধে

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৮:৪৯, ১৫ মার্চ ২০২৫

মাদক বিক্রির অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ নরসিংদী ডিবির ওসির বিরুদ্ধে

ছবি: বিজনেস আই

নরসিংদীতে পুলিশের হাতে উদ্ধার হওয়া ৯৬ কেজি মাদক প্রায় ১৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে ওসি মো: কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানাজানির পর প্রাশাসনিক কারণ দেখিয়ে ডিবি পুলিশের ওসি মো: কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

শনিবার (১৫ মার্চ) পুলিশের ঢাকা রেঞ্জর ডিআই জি এ কে এম আওলাদ হোসেনের স্বাক্ষরিত এক প্রঞ্জাপনে নরসিংদীর দুই পুলিশ পরিদর্শকদ্বয়কে ঢাকা রেঞ্জ অফিসে সংযুক্তি’র বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নরসিংদী পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে মৌখিক একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে। 

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো: কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, এটা ভিত্বিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাছাড়া আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধংশ করলো?

জানা গেছে, চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারী শিবপুর উপজেলার সৃষ্টিঘর নামক স্থানে ৯৬ কেজি গাজা আটক করে স্থানীয়রা। পরে পুলিশকে খবর দিলে তৎকালিন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক আব্দুল গাফফার ঘটনাস্থল থেকে ৯৬ কেজি গাঁজা জব্ধ করে নরসিংদী ডিবি অফিসে নিয়ে অসেন। এবং ওসি কামরুজ্জামানকে অবহিত করেন। ২৫ হাজার টাকা কেজি দরে ৯৬ কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৪ লক্ষ টাকা। আইন অসুসারে জব্ধকৃত মালামাল জিডি মূলে আদালতে উপস্থাপন করা হয়। ওই সময় আদালতের বিচারক জব্ধকৃত ৯৬কেজি গাঁজা (মাদক) ধংশ করে বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু নরসিংদী ডিবি পুলিশের অফির্সাস ইনচার্জ (ওসি) মো: কামরুজ্জামান নরসিংদী কোর্ট পুলিশের অফির্সাস ইনর্চাজ (ওসি) খন্দকার জাকির হোসেনকে ম্যানেজ করে এই ৯৬ কেজি গাঁজা মাধবদী আলগী এলাকার মাদক ব্যাবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে বিক্রি করে দেয়। প্রতি কেজি গাঁজার বাজার মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও চিহ্নিত মাদক ব্যাবসায়ীর কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি ধরে ১৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে বলে অভিযোগ উঠেন ওসি কামরুজ্জামান এর বিরুদ্ধে। পরে সেই টাকা ডিবি’র ওসি ও কোর্টের ওসি ভাগ বন্টন করে নেন। বিষয়টি জানাজানি হলে নরসিংদী পুলিশ সুপারের নিকট মৌখিক অভিযোগ করেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য।  

পুলিশের একটি সূত্র থেকে জানা গেছে,নরসিংদী ডিবি পুলিশের ওসি উদ্ধার হওয়া মাদক বিক্রি করে দেয়ার স্বভাব পুরানো।  ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির করার আগেও ১৮শত টাকা প্রতি পিস হিসেবে প্রায় ৬ শত বোতল ফেনসিডিল  ১০ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।  

এসব বিষয়ে জানতে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মো: কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অফিসার অলামত জব্ধ করেছে। এবং তা জব্ধ তলিকা করে কোর্টে পাঠিয়েছে। এবং কোর্ট রিসিভ করেছে। এবং কোট ধংশ করেছে। এই অর্ডারও আমার অফিসে আছে। এখন কোট ধংশ করেছে না করে নাই সেটা তো কোর্টে ব্যাপার। এখানে আমার কি লাইভেলিটি আছে ? এখানে আমারতো কোন জবাব নেই। তাছাড়া এই আলামত ধংশ করার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেটের।’

৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির বিষয়ে তিনি বলেন, এটা ভিত্বিহীন একটি অভিযোগ। এখানে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। কি ষড়যন্ত্রের শিকার তা যাচাই করে দেখেন। তিনি আরো বলেন, আমি বিক্রি করলে কোর্ট কি ধংশ করলো?

নরসিংদী পুলিশ সুপার মো: আব্দুল হান্নান বলেন, ওসি ডিবি’র বিরুদ্ধে উদ্ধার হওয়া মাদক ধংশ না করে বিক্রির একটি মৌখিক অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসিয়ালী তদন্ত চলছে। তাই কোন মন্তব্য করতে চাই না। প্রথমে সত্য মিথ্যে যাচাই হোক। তদন্ত শেষে এর বিস্তারিত বলা যাবে। 

ইউ

News