সাবেক এমপির বাসা ‘পাগলের আশ্রম’ বানানো সেই নারী সমন্বয়ক গ্রেপ্তার

টাঙ্গাইলে মানসিক ভারসাম্যহীনদের নিয়ে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের বাসা দখল, ভাঙচুর ও চাঁদাবাজির মামলায় সেই নারী সমন্বয়ক ও ছাত্রপ্রতিনিধি মারিয়াম মোকাদ্দেস মিষ্টিকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত ১২টার দিকে টাঙ্গাইল শহর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার মারিয়াম মোকাদ্দেস মিষ্টি বাসাইল উপজেলার জশিহাটী গ্রামের শাহ আলমাসের স্ত্রী।

এর আগে, এই ঘটনায় রোববার রাতে সাবেক এমপির স্ত্রী রওশন আরা খান বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। মামলায় মিষ্টিকে এক নম্বর আসামি ও অজ্ঞাত আরও সাত থেকে নয়জনকে আসামি করা হয়। 

মামলায় রওশন আরা খান উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন শনিবার সকালে গেটের ছয়টি তালা ভেঙে নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং ১০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়। এ ছাড়াও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। যার মূল্য আনুমানিক ৫০ লাখ টাকা। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীনদের নিয়ে বাড়িতে ওঠেন তিনি। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়িতে বসবাস করতে হলে মিষ্টি ১০ কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে না পারলে সাতদিনের মধ্যে বাড়িটি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।  

গত শনিবার সকালে জোয়াহেরুল ইসলামের বাসার তালা ভেঙে ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি। সেখানে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীনদের জন্য আশ্রম বানানোর ঘোষণা দেন। বিষয়টি ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এতে নড়চড়ে বসে প্রশাসন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে যৌথবাহিনী অভিযান পরিচালনা করে বাড়িটি দখলমুক্ত করে। সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথভাবে এ অভিযান পরিচালনা করে। পরে মুচলেকা দিয়ে রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।

এদিকে রোববার রাত ১১টার দিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জনকে ময়মনসিংহ ও গাজীপুরের সরকারি আশ্রমে পাঠানো হয়।

এই বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ওসি তানবীর আহমেদ বলেন, মামলার পর শহরে অভিযান চালিয়ে মিষ্টিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার তাঁকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হবে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরীফ জানান, নারী মানসিক ভারসাম্যহীনদের গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি মানসিক ভারসাম্যহীন আশ্রমে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া পুরুষ যারা রয়েছেন সরকারিভাবে তাঁদের ময়মনসিংহ মানসিক ভারসাম্যহীন আশ্রমে পাঠানো হয়েছে।