
ফাইল ছবি
রমজান মাসের পবিত্রতা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সমাপ্তি টানতে প্রস্তুত সবাই। একদিকে যেমন রোজা রাখার পর মনে শান্তি ও প্রশান্তি এসে পৌঁছায়, তেমনি অন্যদিকে ঈদকে কেন্দ্র করে শুরু হয়ে গেছে আনন্দমুখর কেনাকাটা। রমজান শেষে ঈদের উৎসবে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন বাজারে জমে উঠেছে কেনাকাটার হিড়িক। বিশেষ করে ঢাকার বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে চলছে ঈদের কেনাকাটা নিয়ে উত্তেজনা।
ঈদ উপলক্ষে পোশাকের বাজারে রয়েছে নানা ধরনের পরিবর্তন। পুরনো দিনের রেওয়াজ অনুযায়ী, সাধারণত সিল্ক, জামদানি, নকশী শাড়ি ও কুর্তা-পাজামার প্রচলন ছিল। কিন্তু বর্তমানে নতুন ট্রেন্ডে চলে এসেছে নানা ধরনের আধুনিক ডিজাইনের জামা-কাপড়। ফ্যাশনেবল ডিজাইন ও উজ্জ্বল রঙের শাড়ি, লেহেঙ্গা, এবং কুর্তা-পাজামা বিক্রি হচ্ছে সেলফি টানানো স্টাইলে। প্রিয়জনদের জন্য পছন্দের পোশাক নির্বাচন করতে অনেকেই সময় ব্যয় করছেন।
ঈদে বিশেষ পোশাকের সাথে গয়নারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নানা ধরনের হালকা ও ভারী গয়না, চুড়ি, কানের দুল, নেকলেস ও ব্রেসলেটের বাহারি সমাহার বাজারে দেখা যাচ্ছে। দোকানগুলোতে চলছে ভিড়, আর বিভিন্ন দোকানে পাওয়া যাচ্ছে আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট অফার, যা ক্রেতাদের আরও উৎসাহিত করছে।
ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরেই তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের সুস্বাদু খাবার। রমজানের শেষ দিকে, পরিবার-পরিজন নিয়ে ঐতিহ্যবাহী বিশেষ খাবার তৈরির প্রস্তুতিও চলছে। সেমাই, জিলাপি, খিরনি, মাংস ও পোলাওসহ নানা মজাদার খাবারের আয়োজন এখন ঘর-ঘরেই শুরু হয়ে গেছে।
ঈদের কেনাকাটার এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে অনলাইনে। মানুষ এখন ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটারে ই-কমার্স সাইট থেকে পোশাক, গয়না, খাদ্যদ্রব্যসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনাকাটা করছেন। অনলাইনে কেনাকাটা বাড়াতে ডিজিটাল পেমেন্টের সুবিধা দিচ্ছে বেশ কিছু বড় প্রতিষ্ঠান।
অবশ্য, বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থায় আগের মতো আনন্দের সঙ্গে ঈদের কেনাকাটা করতে পারছেন না অনেকেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষদের জন্য ঈদের কেনাকাটা সীমিত হয়ে গেছে। তবে, অনেকের পক্ষ থেকে সামান্য হলেও কেনাকাটার পরিকল্পনা থাকলেও, সাধ্যমতো আয়োজনের চেষ্টা চলছে।
বাজারে কেনাকাটা চলছে, তবে এ সময় ভোগবাদিতা যেন যেন ঈদের প্রকৃত মহিমাকে আড়াল না করে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত। ঈদ তো আসবে আবার চলে যাবে, কিন্তু সমাজের প্রতি দায়িত্ব, মিতব্যয়িতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনটাই আসল।
যেহেতু ঈদ আমাদের এক মিলনের বার্তা দেয়, তাই আসুন, আনন্দের মধ্যেও একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজে ভালবাসার বন্ধন আরও দৃঢ় করি।
ইউ