
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। তারা হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন। ছাত্রদল এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে বিক্ষোভ থেকে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষার্থীরা বুয়েট শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে পলাশী, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, বকশিবাজার ঘুরে বুয়েট শহীদ মিনারে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সমাবেশে লিখিত বক্তব্য দেন বুয়েটের ১৯তম ব্যাচের ছাত্র আবু ওবায়দা মায়াজ ও আরাফাত সাকিব।
লিখিত বক্তব্যে আরাফাত সাকিব বলেন, কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ছাত্রদল নিজেদের ফরম বিক্রির কার্যক্রম চালায়। এর প্রতিবাদে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করতে চাইলে সেখানে ন্যাক্কারজনকভাবে নৃশংস হামলা চালায় বহিরাগত ছাত্রদল সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী বিকেল পর্যন্তও কুয়েটে আমাদের ভাইয়েরা একের পর এক হামলার শিকার হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা পরিষ্কার কন্ঠে ঘোষণা করতে চাই, বাংলাদেশকে আরেকটি নৈরাজ্যপূর্ণ রাষ্ট্রে পরিণত হতে আমরা দেবো না। হাজারো শহীদের রক্তস্নাত এই ফ্যাসিস্টমুক্ত স্বাধীন দেশে ফ্যাসিস্টদের পুরনো পদচারণা আমরা মেনে নেবো না। কুয়েটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা একান্তই কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের, কোনো বহিরাগত সন্ত্রাসীর না।
আরাফাত বলেন, ইতোপূর্বে বুয়েটে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যেমন বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিল, ছাত্রদলের বর্তমান সন্ত্রাসীদের কার্যকলাপের বিরুদ্ধেও বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অবস্থান অনঢ় এবং সুদৃঢ়।
আবু ওবায়দা মায়াজ বলেন, আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই অতিদ্রুত হামলাকারী সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। কোনো হামলাকারী ছাড় পেলে তা হবে জুলাই আন্দোলনের শহীদদের সাথে অবমাননা। এর পাশাপাশি, কুয়েটসহ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যেই লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়েছিল, তাদের সেই অবস্থানকে সম্মান করুন।
তিনি আরও বলেন, আমরা কুয়েট প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, কোনোভাবেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিরেয় ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি পুনর্বাসনের চেষ্টা করবেন না, অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর বিরুদ্ধে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
বুয়েট ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সেখানেও সংঘর্ষের জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেওয়া হয়েছে। তবে হামলার জন্য ছাত্রদল অন্য একটি সংগঠনকে দায়ী করছে। সংগঠনটি নাম উল্লেখ না করে ছাত্রদল বলছে কুয়েটে হামলার ঘটনায় একটি ‘গুপ্ত’ সংগঠন দায়ী।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাস এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। সমাবেশে ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, আপনারা জানেন দু-দিন আগে কুয়েটে একটি গুপ্ত সংগঠন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে মিছিল বের করে। সেখানে আমাদের ছাত্রদলের ভাইয়েরা পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের ওপর বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়ে আহত করে। তারা ক্যাম্পাসে মব সৃষ্টি করে বুঝাতে চায় ছাত্রলীগের মতোই ছাত্রদল ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যারা ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে চায়, তারাই ক্যাম্পাসগুলোতে নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠনের দোকান খুলে বসেছে।
টিএইচ