ঢাকা,

২৫ নভেম্বর ২০২৪


সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে জানলো সিলেটের ৫৩০ শিক্ষার্থী

Mazharul Islam Mitchel

প্রকাশিত হয়েছে: ২১:৫৬, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪

আপডেট: ২১:৫৬, ২৮ জানুয়ারি ২০২৪

সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে জানলো সিলেটের ৫৩০ শিক্ষার্থী

 

জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির উদ্যোগে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫৩০ জন শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে রবিবার (২৮ জানুয়ারি ২০২৪) সিলেটের কবি নজরুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হলো ‘নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার’ সেমিনার।

ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহায়তায় জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি ও জেলা প্রশাসন, সিলেট এর আয়োজনে দিনব্যাপী এ সেমিনার অনুষ্ঠিত সেমিনারের শুরুতেই শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সেমিনার উপকরণ ও সাইবার নিরাপত্তা লিফলেট বিতরণ করা হয়।

জেলা কালচারাল কর্মকর্তার সঞ্চালনায় উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো: কামরুজ্জামান। সিলেট জেলা প্রশাসকশেখ রাসেল হাসানের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, জেলা শিক্ষা অফিসার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ, সমাজকর্মী, এনসিএসএ’র কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং স্থায়ী সাংবাদিকরা।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) হোসাইন মোঃ আল-জুনায়েদ এই সেমিনার আয়োজনের জন্য এনসিএসএ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান। স্বাগত বক্তা, ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের শিক্ষার্থীদের বিশেষ সতর্ক হতে হবে। ইন্টারনেট জগতে সবকিছুর প্রমাণ থেকে যায়। তাই কোনকিছু শেয়ার করার আগে ভালোভাবে যাচাই করে সংবাদটির সত্যতা সম্পর্কে জেনে শেয়ার করতে হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার জনাব আবু সাঈদ মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ তার আলোচনায় বলেন, ইন্টারনেট জগৎ জ্ঞানের ভান্ডার। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা ঘরে বসেই পড়াশোনা করেছে, সিলেবাস শেষ করেছে। কিন্তু ইন্টারনেট ব্যবহার বৃদ্ধির সাথে সাথে নিরাপত্তা ঝুঁকিও বেড়েছে। ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে আরো সচেতন হতে হবে। তিনি শিক্ষকদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাইবার নিরাপত্তার বেসিক কোর্সগুলো সম্পন্ন করার জন্য শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে বলেন।

সহকারী পুলিশ সুপার সম্রাট তালুকদার নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে আমরা এখনও অভ্যস্ত হয়ে ওঠিনি মর্মে মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আজকের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিবে এবং ইন্টারনেট সঠিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেকে ও দেশকে সুরক্ষিত রাখা যায় তা শিখবে।

‘সবার জন্য নিরাপদ ইন্টারনেট’ এর পরিচালক জেনিফার আলম বলেন, সাইবার জগতে সবকিছুরই ফুটপ্রিন্ট রয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেক একাউন্ট তৈরি করে অন্যকে অপদস্ত করা, অপরিচিত ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব, বন্ধুদের সাইবার বুলিং করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ফলে নিজে এবং আশপাশের সবাই নিরাপদে থাকতে পারবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ও প্রধান অতিথি জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো: কামরুজ্জামান স্মার্ট বাংলাদেশের ৪টি স্তম্ভ নিয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, একজন নিয়মানুবর্তী শিক্ষার্থী নিজেকে স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। ইন্টারনেট ব্যবহারে শিক্ষার্থীদের সচেতন হতে হবে। পারিবারিক মূল্যবোধই একজন কোমলমতি শিক্ষার্থীকে অপরাধ জগৎ থেকে দূরে রাখতে পারে। এছাড়া, নতুন পাশকৃত সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ এর প্রয়োজনীয়তা এবং সাইবার নিরাপত্তার বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন। পাশাপাশি জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি এর বিভিন্ন কার্যক্রম এবং ভবিষ্যত পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

সাইবার টিনস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাদাত রহমান তার আলোচনায় সাইবার বুলিং এর বিভিন্ন উদাহরণ উপস্থাপন করে তা প্রতিরোধে করণীয় তুলে ধরেন এবং কিশোর-কিশোরীরা সাইবার বুলিং এর শিকার হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনকৃত হটলাইন নম্বর ১৩২১৯ এ অবহিত করতে বলেন। তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের নিয়ে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কুইজ প্রতিযোগিতা পরিচালনা করেন এবং বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

উক্ত সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা সাইবার বুলিং, সাইবার নিরাপত্তা, সচেতনতা প্রচার প্রচারণা, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা এবং নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্ন উপস্থাপন করেন। মুল প্রবন্ধ উপস্থাপক, আলোচকবৃন্দ এবং এনসিএসএ’র কর্মকর্তারা উক্ত প্রশ্নসমূহের যথাযথ উত্তর প্রদান করেন।

News