ঢাকা,

০৪ জানুয়ারি ২০২৫


নতুন বছরে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ : নেয়া যেতে পারে যেসব পদক্ষেপ

আবু সালেহ মো. ইউসুফ

প্রকাশিত হয়েছে: ১৫:৫৭, ১ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১৮:১০, ১ জানুয়ারি ২০২৫

নতুন বছরে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ : নেয়া যেতে পারে যেসব পদক্ষেপ

ছবি: বিজনেস আই

২০২৫ সালে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছাবে, যেখানে দেশটির সামনে উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য একাধিক সুযোগের পাশাপাশি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জও বিদ্যমান থাকবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরেরও বেশি সময় পর দেশটি বৈশ্বিক অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন, এবং প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির যুগে প্রবেশ করেছে। এই প্রেক্ষাপটে, দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা, পরিবেশগত সংকট মোকাবিলা, এবং জনগণের জীবনমান উন্নত করা একটি জটিল কিন্তু অপরিহার্য কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নতুন বছরের এই পথচলায়, বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় স্তরে বিভিন্ন সংকট ও সম্ভাবনার মুখোমুখি হতে হবে। একদিকে, উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশের মর্যাদা ধরে রাখতে হলে বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে; অন্যদিকে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাব মোকাবিলা করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একইসঙ্গে, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে দেশকে একটি টেকসই উন্নয়ন মডেলের দিকে নিয়ে যেতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সঠিক পরিকল্পনা এবং কার্যকর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

প্রধান চ্যালেঞ্জগুলো:

অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি এবং বৈদেশিক ঋণের চাপে সামঞ্জস্য বজায় রাখা অন্যতম চ্যালেঞ্জ। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং আমদানি ভারসাম্য রক্ষা করতে কার্যকর কৌশল প্রয়োজন। একইসঙ্গে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বেকারত্ব হ্রাস করা সরকারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য।

জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদী ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়, এবং বন্যার মতো দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়ছে। এর ফলে কৃষি উৎপাদন হ্রাস এবং খাদ্য নিরাপত্তার সংকট দেখা দিতে পারে। পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় টেকসই ব্যবস্থা প্রয়োজন।

শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন
বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকায়ন অপরিহার্য। কারিগরি এবং পেশাগত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনশক্তিকে দক্ষ করে তোলা এক বড় চ্যালেঞ্জ।

গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং সুশাসন রক্ষা করাও দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। দুর্নীতি দমন এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

স্বাস্থ্যসেবা
সবার জন্য মানসম্পন্ন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, বিশেষ করে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য, বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। মহামারি মোকাবিলায় প্রস্তুতি জোরদার করাও প্রয়োজন।

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পদক্ষেপ:

অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা
রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে (SMEs) সহায়তা, এবং সাশ্রয়ী বিনিয়োগ পরিকল্পনার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করা যেতে পারে।

পরিবেশ রক্ষা
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমাতে জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির ব্যবহার বাড়ানো জরুরি। বনায়ন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়নও অপরিহার্য।

শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন
শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি দক্ষতার সমন্বয় সাধন এবং বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করে একটি দক্ষ কর্মশক্তি তৈরি করা সম্ভব।

সুশাসন প্রতিষ্ঠা
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা যেতে পারে।

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন
প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন এবং স্বাস্থ্যখাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন। স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং মহামারি প্রস্তুতি উন্নত করা উচিত।

বাস্তবায়নের উপায়
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকা
রি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাত এবং সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং কৌশলগত বিনিয়োগ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

২০২৫ সালে বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, প্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন, এবং পরিবেশগত টেকসইতা নিশ্চিত করতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

ইউ

News