ঢাকা,

২১ নভেম্বর ২০২৪


‘খাল বাঁচলেই বাঁচবে নগর’ শীর্ষক স্কুলভিত্তিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি  

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ২১:১৫, ২০ নভেম্বর ২০২৪

আপডেট: ২১:১৮, ২০ নভেম্বর ২০২৪

‘খাল বাঁচলেই বাঁচবে নগর’ শীর্ষক স্কুলভিত্তিক সচেতনতামূলক কর্মসূচি  

ছবি: বিজসেন আই

প্লাস্টিক-পলিথিন ইত্যাদি বর্জ্য বৈশ্বিক পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে উপস্থিত হয়েছে। উদ্বেগজনক হারে এইসব দ্রব্যাদির ব্যবহার সারা পৃথিবীতে সবার জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা মহানগরীতে জলাবদ্ধতা ও বৃষ্টিজনিত মৌসুমী বন্যার প্রধান কারণও প্লাস্টিক-পলিথিন। এই সকল বর্জ্য নালা-নর্দমা ও খালসমূহের পানি-প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করছে। কঠোরভাবে আইনের প্রয়োগ এবং নগরবাসীর অভ্যাস ইতিবাচকভাবে পরিবর্তনের মাধ্যমে প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে মহানগরীর জলাবদ্ধতা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।

বুধবার (২০ নভেম্বর) রেডঅরেঞ্জ কমিউনিকেশন্স এবং ওশানবাউন্ড কর্তৃক নগরীর কল্যাণপুর খালের নিকটবর্তী  স্কুল “নবদিগন্ত আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়” প্রাঙ্গনে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত এক স্কুল ক্যাম্পেইনে উপস্থিত বক্তারা উপরোক্ত বিষয়ে আলোকপাত করেন।

তারা আরও উল্লেখ করেন, ঢাকা মহানগরীতে বছরে জনপ্রতি ২৪ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহৃত হয়; ২০৩০ সালের মধ্যে এর পরিমাণ ৩৪ কেজিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনবে। এসকল প্লাস্টিক-পলিথিন বোতল বা ব্যাগ ব্যবহারের পর যত্রতত্র ফেলে দেবার ফলে নালা-নর্দমা ও খালের পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করছে। এতে জলাবদ্ধতা ও বন্যা পরিস্থিতি আরও গুরুতর হচ্ছে। বিশেষ করে কল্যাণপুর এলাকার প্রায় ১৫ লক্ষ বাসিন্দা প্রতি বছর বৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে চরম দুর্ভোগে পড়ে।

অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন নবদিগন্ত আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ এনামুল হক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) বিশেষ প্রতিনিধি ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী জনাব সোহাগ মিয়া এবং জাতিসংঘের প্রকল্পকর্ম বিষয়ক দপ্তর (ইউএনওপিএস) এর বিশেষ প্রতিনিধি ও ‘প্লিজ’ প্রজেক্টের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জনাব মো: ওবাইদুল ইসলাম। এছাড়া রেডঅরেঞ্জ কমিউনিকেশন্সের পরিচালক অলক কুমার মজুমদার সহ তার অন্যান্য সহকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

ক্যাম্পেইনের এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্লাস্টিক বর্জ্যের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করা হয়। তাদের মধ্যে রং করার বই এবং রঙ পেন্সিল বিতরণ করা হয়, যাতে বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে প্লাস্টিক দূষণের নেতিবাচক দিক ও পরিবেশ বান্ধব অভ্যাসের চর্চা তুলে ধরা হয়। শিক্ষার্থীরা উৎসাহ- উদ্দীপনা ও আনন্দের মধ্য দিয়ে সচেতনতা বিষয়ক বার্তাগুলো গ্রহণ করে।

প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবহার কমানো, সচেতনতা তৈরি, খালসহ নগরের জলাশয়গুলো পরিষ্কার রাখা এবং পরিবেশবান্ধব অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষকদের ভূমিকা সম্পর্কেও একটি বিশেষ সেশনের আয়োজন করা হয়। শিক্ষকদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও এই আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।

রেডঅরেঞ্জ কমিউনিকেশনস এবং ওশানবাউন্ডের উদ্যোগে “প্লিজ” প্রকল্পটি বিশ্বব্যাংক ও জাতিসংঘের প্রকল্পকর্ম বিষয়ক দপ্তর (ইউএনওপিএস)-এর সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটির উদ্দেশ্য হলো প্লাস্টিক দূষণ রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি, বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সমাজের মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশগত সমস্যার সমাধানে সকলের প্রতিশ্রুতি নিশ্চিত করা।

ইউ

News