ছবি: বিজসেন আই
ব্র্যাক ব্যাংক চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফের সদস্যরা হরিশংকর জলদাসের গল্পগ্রন্থ ‘অষ্টাদশী’ এবং চুয়াডাঙ্গা রিডিং ক্যাফের সদস্যরা আবু ইসহাকের কালজয়ী উপন্যাস ‘সূর্য দীঘল বাড়ী’ নিয়ে সাহিত্য আড্ডার আয়োজন করেছেন। উভয় সাহিত্যকর্মেই ফুটে উঠেছে এদেশের অদম্য নারী চরিত্র ও তাঁদের সংগ্রামী জীবন কাহিনী।
ব্র্যাক ব্যাংক চট্টগ্রাম রিডিং ক্যাফেতে পঠিত হরিশংকর জলদাসের অন্যতম এই সাহিত্যকর্মে লেখক জেলে এবং সমাজের তথাকথিত নিম্নবর্ণের মানুষদের কষ্টকর জীবনের প্রতিচ্ছবি চিত্রায়িত করেছেন।
৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে আয়োজিত এই সাহিত্য আড্ডায় লেখক নিজেই উপস্থিতি ছিলেন, যা আলোচনাকে করে তুলেছিল আরও প্রাণবন্ত। লেখকের সাথে পাঠচক্রের সদস্যরা গল্পের চরিত্রগুলোর বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনার এক পর্যায়ে লেখক উপস্থিত পাঠকদের এই বই সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন।
হরিশংকর জলদাসের অষ্টাদশীতে উঠে এসেছে এদেশের নারীদের নিয়ে বহুকাল থেকে চলে আসা বিদ্রুপ, পক্ষপাতদুষ্টতা, একতরফা নিয়মকানুন এবং প্রিয়জন কর্তৃক বিশ্বাসঘাতকতার মতো চিরায়ত বিষয়গুলো। মনোমুগ্ধকর লেখনশৈলী দিয়ে লেখক ১৮টি ছোটগল্পের মাধ্যমে সমাজে নারীর ভালোবাসা, প্রতিবাদ, প্রতিশোধ এবং সহনশীলতার চিত্র তুলে ধরেছেন। প্রতিটি গল্প একজন অনন্য নারী চরিত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে, যা আলোচকদের নারী জীবনের অনেক বিষয় আরও ভালোভাবে উপলব্ধি করতে সহায়তা করেছে।
অন্যদিকে সূর্য দীঘল বাড়ী নিয়ে আলোচনা করতে ব্র্যাক ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা রিডিং ক্যাফের সদস্যরা ১৫ অক্টোবর ২০২৪ একত্রিত হয়েছিলেন। এই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র জয়গুনের সাহসিকতায় পাঠকরা মুগ্ধ হয়েছিলেন। উপন্যাসে জয়গুন হলো এমন একটি চরিত্র, যিনি ছিলেন একজন তালাকপ্রাপ্ত সিঙ্গেল মা। বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে সাধারণ জীবনযাপন করতে গিয়ে তিনি শিকার হয়েছিলেন নানান বাধা-বিপত্তি, সামাজিক ভ্রান্তবিশ্বাস, কুসংস্কার এবং ত্রুটিপূর্ণ বিচারব্যবস্থার।
সূর্য দীঘল বাড়ী হলো এমন একটি সাহিত্যকর্ম, যেখানে ভারত বিভাগের সময় ১৯৪৩ সালে ঘটে যাওয়া দুর্ভিক্ষের সময় গ্রামবাংলার একজন সাহসী নারীর জীবনে নেমে আসা বাধা-বিপত্তি মোকাবেলার অনন্য চিত্র ফুটে উঠেছে।
ব্র্যাক ব্যাংকের বইপড়ার সংস্কৃতি নিয়ে ব্যাংকটির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও সেলিম রেজা ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘ব্র্যাক ব্যাংকে আমরা বিশ্বাস করি যে, দলগত বইপড়া আমাদের সহকর্মীদের মাঝে শেখা এবং বিশ্লেষণধর্মী চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটানোর পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কেরও উন্নয়ন ঘটায়। সাহিত্য ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে উন্নতির দ্বার উন্মোচন করে দেয়। আমাদের প্রতিষ্ঠানের পড়ার সংস্কৃতি নিয়ে আমি সত্যিই অনেক আনন্দিত এবং আমি আশা করি, দেশব্যাপী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এই চর্চা পৌঁছে যাবে।’
ইউ