ঢাকা,

১৮ অক্টোবর ২০২৪


বাংলার নায়ক ও গায়ক জাফর ইকবাল

বিজনেস আই রিপোর্ট

প্রকাশিত হয়েছে: ১৭:০৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বাংলার নায়ক ও গায়ক জাফর ইকবাল

ফাইল ছবি

বাংলা সিনেমার স্টাইলিশ নায়কদের তালিকার প্রথমদিকের নায়ক জাফর ইকবাল। ১৯৭০ ও ১৯৮০-র দশকে দর্শকদের মনে আলাদাভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। নতুন প্রজন্মের অনেকেই হয় তো চিনে না চিত্রনায়ক জাফর ইকবালকে। একইসঙ্গে গায়ক ও নায়ক ছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রে তীব্র প্রতিযোগিতার ভিড়ে নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন। স্বাধীনতার ডাক শুনে অস্ত্র হাতে গিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধেও। জীবন তার অনেক সংগ্রামের রঙে রঙিন। ৬০ দশকের শেষের দিকে ‘আপন-পর’ ছবির মাধ্যমে তিনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। খান আতাউর রহমান পরিচালিত ছবিটি মুক্তি পেয়েছিলো ১৯৬৯ সালে। এতে জাফর ইকবালের নায়িকা ছিলেন কবরী। ঢাকাই ছবিতে জাফর ইকবাল ছিলেন সত্তর ও আশির দশকের হার্টথ্রুব নায়ক। তাকে স্টাইল আইকন হিসেবে নিয়েছিলেন সেসময়ের তরুণরা। জাফর ইকবাল ১৯৫০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। 

১৯৭০ দশকের মাঝামাঝি ‘সূর্য সংগ্রাম’ ছবিতে ববিতার বিপরীতে প্রথম অভিনয় করেন তিনি। নায়ক জাফর ইকবালের সঙ্গে জুটি হয়ে ৩০টির মতো সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন ববিতা। তিনি রোমান্টিক নায়ক হিসেবে পরিচিতি পান ‘নয়নের আলো’ সিনেমার মাধ্যমে। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মাস্তান’ ছবির বদৌলতে ‘ড্যাশিং’ নায়কের পরিচিতি পান জাফর ইকবাল। ১৯৭৫ সালের ‘মাস্তান’ ছবিটি তাকে সে প্রজন্মের প্রতিনিধিত্বকারী নায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠা দেয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের রাগী, রোমান্টিক, জীবন-যন্ত্রণায় পীড়িত কিংবা হতাশা থেকে বিপথগামী তরুণের চরিত্রে তিনি ছিলেন পরিচালকদের অন্যতম পছন্দ। ধীরে ধীরে সামাজিক প্রেমকাহিনী ‘মাস্তান’- এর নায়ক রোমান্টিক নায়ক হিসেবে জনপ্রিয়তা পান। তাঁর শেষ সিনেমা ছিলো ‘লক্ষ্মীর সংসার’। প্রায় ১৫০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জাফর ইকবাল। 

গায়ক হিসেবেও জাফর ইকবাল ছিলেন অনন্য। ছোটবেলা থেকেই গানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৬৬ সালে বন্ধুদের নিয়ে ‘রোলিং স্টোন’ ব্যান্ড গড়েছিলেন। সংগীত পরিচালক ও ভাই আনোয়ার পারভেজের সুরে ‘বদনাম’ ছবির ‘হয় যদি বদনাম হোক আরও’ গানটি দিয়ে প্লেব্যাকে তার অভিষেক হয়েছিলো। সুরকার আলাউদ্দিন আলীর সুরে অনেক গান গেয়েছিলেন। তার গাওয়া শ্রোতা প্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘সুখে থেকো ও আমার নন্দিনী হয়ে কারো ঘরনি’, ‘তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন’, ‘হয় যদি বদনাম হোক আরও’ ইত্যাদি। ১৯৮০র দশকে ‘কেন তুমি কাঁদালে’ শিরোনামে তার একটি অডিও অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছিলো। বাংলাদেশ টেলিভিশনের ২৫ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে ‘এক হৃদয়হীনার কাছে হৃদয়ের দাম কি আছে’ গানটি গেয়েছিলেন জাফর ইকবাল। পরে রফিকুল আলমও এই গানটি গেয়েছিলেন। ১৯৯২ সালের ৮ জানুয়ারি তিনি না ফেরার দেশে চলে যান।

ইউ

News