ফ্রেন্ডশিপ’র সহায়তায় স্বাবলম্বী উপকূলের শতাধিক নারী

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধুলাসার ইউনিয়নের বাসিন্দা মনিকা রানী অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে অভাব অনটনে, অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতেন। তার এই করুন সময় আশীর্বাদ হয়ে পাশে দাড়িয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘ফ্রেন্ডশিপ’। তাদের দেয়া হাঁস পালন করে মনিকা রানী এখন স্বাবলম্বী। 

শুধু মনিকা রানীই নয়, পটুয়াখালীর উপকূলের ১২০ নারী সংশারের দৈনন্দিন কাজের পাশ পাশি হাঁস-মুরগি পালন,  শাক-সবজি চাষ এবং তাতের চাদর বোনাসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে পরিবারে আর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তনে ভূমিকা রাখছেন। এসমব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি জীবনমান উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন তারা। ফলে স্বচ্ছলতা ফিরেছে উপকূলের এসব অসচ্ছল পরিবারগুলোতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ফ্রেন্ডশিপ সংস্থার এএসডি প্রকল্পের সহযোগিতা নিয়ে কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর,লতাচাপলি ইউনিয়নের ১২০ জন অসচ্ছল নারী উপার্জনের পথ খুজে পেয়েছেন। সংস্থা থেকে এসব নারীদের ৩ ভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রকল্পের মাধ্যমে যাদের চাষাবাদের জমি আছে তাদের সবজির বীজ এবং কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে। যাদের পুকুর অথবা উঠানে জমি আছে তাদের দেওয়া হয়েছে উন্নত জাতের হাঁস। এছাড়াও কিছু সংখ্যক নারীদের তাঁতশিল্পের উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদেরকে তাঁত কাজে ব্যাবহৃত কাঁচামাল প্রদান করা হয়েছে।

সম্প্রতি প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যেসব পরিবারের নারীরা ফ্রেন্ডশিপ এর পক্ষে থেকে সহায়তা ও প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাদের অধিকাংশই ভালো অবস্থানে রয়েছেন। 

প্রকল্পের সুফল ভোগী মনিকা রানী বলেন, ‘এই প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা আশার আলো দেখতে পেয়েছি। প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁস পালন শুরু করায় আমি এখন নিয়মিত হাঁসের ডিম বিক্রি করে যে আয় হয় তাতে সংসারের অনেক প্রয়োজনীয় কাজ ভালোভাবে করতে পারি। দিন দিন আমাার হাঁসের সংখ্যা বাড়ছে। আর এখন হাঁসের চাহিদাও ভালো থাকায় ভালো দামে তা বিক্রি করতে পারছি। আমার দেখা দেখি এই এলাকায় অনেকেই এখন হাসঁ পালন শুরু করেছে।’

ফ্রেন্ডশিপ এর এএসডি প্রকল্পের সিনিয়র প্রজেক্টর ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সদস্যদের আয় রোজগার বৃদ্ধির জন্য আমরা বিভিন্ন ধরনের সহায়তা প্রদান করছি। এর ফলে তাদেরা অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সম্পদ বৃদ্ধি এবং সমাজে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখা সম্ভব হচ্ছে। সদস্যদের মাঝে মৌসুমভিত্তিক বছরে দুই বার ভালো মানের বিভিন্ন জাতের ১৫ থেকে ১৬ প্রজাতির সবজির বীজ, কিটনাশক ফাঁদ ও ঔষধ বিতরণ করা হয়েছে। এর ফলে তাদের পরিবার এবং সমাজে দৃশ্যমান উন্নতি প্রতিয়মান হচ্ছে।’