ছবি: গ্রাফিক্স
শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক-কর বাড়ানোর মাধ্যমে নতুন বছরের শুরুতেই ক্রেতাদের জন্য বাড়তি খরচের বোঝা নিয়ে এসেছে সরকার। পণ্যের ধরন অনুসারে শুল্ক ২.৫ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ পদক্ষেপ দেশের সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলবে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং বাড়তি শুল্ক-কর একসঙ্গে মিলে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়বে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেয়া হলেও এর ফলে সাধারণ মানুষের ব্যয় বেড়ে যাবে। কিছু পণ্য ও সেবার ওপর শুল্ক-কর বাড়ানো হয়েছে, যা প্রায় সব শ্রেণির মানুষকে প্রভাবিত করবে। ফল, টিস্যু, বিস্কুট, ডিটারজেন্ট, সাবান, রেস্তোরাঁর খাবার, ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন সেবা, এলপি গ্যাস, পোশাক, সিগারেটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং সেবায় বাড়তি খরচ গুনতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, দেশি-বিদেশি ফলের ওপর ১০ শতাংশ, বিস্কুট-কেকের ওপর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ, এবং ডিটারজেন্টের শুল্ক ২০ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ করা হয়েছে। এলপি গ্যাসের শুল্ক বেড়েছে আড়াই শতাংশ, আর সব ধরনের টিস্যুর শুল্ক সাড়ে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। সিগারেটের বিভিন্ন স্তরে শুল্ক বেড়েছে ৭ শতাংশ পর্যন্ত।
রেস্তোরাঁয় খাওয়া-দাওয়া করতে চাইলে শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫ শতাংশ হয়েছে। বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে টিকিটের ওপর ২০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক যুক্ত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবার ব্যয়ও বাড়বে।
এ সিদ্ধান্তে সাধারণ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এ পদক্ষেপ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের জন্য বাড়তি চাপে পরিণত হবে। অন্যদিকে, ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির প্রভাবের সঙ্গে নতুন শুল্কের চাপ তাদের আয় কমিয়ে দেবে। বিশেষ করে রেস্তোরাঁ খাতে এ শুল্ক বাড়ার কারণে ক্রেতাদের কম খরচের দিকে ঝোঁকার সম্ভাবনা রয়েছে, যা ভালো মানের ব্যবসার জন্য ঝুঁকি তৈরি করবে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, রাজস্ব আদায়ের জন্য শুল্ক-কর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত বাস্তবিক কারণে জরুরি হলেও এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর নেতিবাচক হতে পারে। সরকারের উচিত বিকল্প পন্থা খুঁজে রাজস্ব সংগ্রহ করা, যাতে জীবনযাত্রার ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
ইউ