ঢাকা,

২২ ডিসেম্বর ২০২৪


ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তায় এফএও’র ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাক্সেস প্রকল্প উদ্বোধন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত হয়েছে: ১৪:২৬, ৩০ মে ২০২৪

ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের সহায়তায় এফএও’র ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাক্সেস প্রকল্প উদ্বোধন

বাংলাদেশে শক্তিশালী উৎপাদনকারি কৃষক সংগঠন গড়ে তোলার মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকদের আর্থিক ও সামাজিক অন্তর্ভূক্তি ত্বরান্বিতকরণ প্রকল্প উদ্বোধন হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ঢাকায় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ও কৃষি মন্ত্রণালয় এবং সারা বাংলা কৃষক সোসাইটি (এসবিকেএস) যৌথভাবে কাজ করবে। বাংলাদেশের জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে ৪০ হাজার ক্ষুদ্র কৃষকদের গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে এই প্রকল্প উদ্বোধন হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দুর্গম এলাকার জনগোষ্ঠীর কাছে কৃষির সকল সেবা পৌঁছানোর জন্য, আমাদের অবশ্যই অ্যাক্সেস প্রকল্পের মতো অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায় মডেল উদ্ভাবন করতে হবে, যা উৎপাদনকারি সংগঠনের সাথে সরকারি ও বেসরকারি খাতের সংযোগ ও সহযোগিতার দ্বার উন্মোচন করবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাস উদ্বোধনী আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, পিকেএসএফ, সম্প্রসারণ সংস্থা এবং গবেষণা সংস্থার প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন।

আলোচকগণ কৃষি রূপান্তরে উৎপাদনকারি সংগঠনের ভূমিকার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন বিশেষত কৃষির বৈচিত্র্যকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ, যান্ত্রিকীকরণ এবং ডিজিটালাইজেশনের ক্ষেত্রে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা বলেছেন।

বাংলাদেশে এফএও প্রতিনিধি দিয়া সানো বলেন, “অ্যাক্সেস প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ জীবনমান উন্নয়নে কৃষক উৎপাদনকারি সংগঠনগুলোর সাথে আমরা অংশীদার হিসাবে কাজ করব। একই সাথে আমরা কৃষি ব্যবসা ক্লাস্টারগুলোকে গুরুত্ব দিব এবং ক্ষুদ্র কৃষকরা যাতে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য খামারগুলোকে সফল ব্যবসায় রূপান্তর করতে পারে, তাদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা নিশ্চিত করব।

কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের বাণিজ্যিক  কৃষকদের জন্য অ্যাক্সেস প্রকল্পটি অত্যন্ত সময়োপযোগী। কৃষি ঋণ যাতে ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য সহজলভ্য করা যায় এ বিষয়ে প্রকল্পটি কাজ করবে। তবে ঋণের পাশাপাশি কৃষি বীমার বিষয়টি নিয়েও কৃষি মন্ত্রণালয়ের নীতি নির্ধারনী মহলে কাজ করা প্রয়োজন। রেমাল ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের মৎস্য খামার ও প্রাণীসম্পদের যে ক্ষতি করেছে, আজ যদি তাদের কৃষি বীমা থাকতো তবে তারা অন্তঃত একবোরে নিঃস্ব হতো না।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. ইমানুন নবী খান, অ্যাক্সেসের এফএও সমন্বয়কারী এবং এসবিকেএস'র প্রেসিডেন্ট মিসেস রিতা ব্রাহ্মো। তারা বাংলাদেশে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শক্তিশালী কৃষক উৎপাদনকারি সংগঠনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষকদের অংশীদারিত্ব এবং ক্ষমতায়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবসায়িক মডেল উপস্থাপন করেন।

উদ্বোধনী অধিবেশনের পর, এফএও, এসবিকেএস এবং জলবায়ু প্রতিপন্ন এলাকা হটস্পট থেকে আগত ১০০ ক্ষুদ্র কৃষকদের অংশগ্রহণে মধ্যে একটি অনানুষ্ঠানিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

এক্সেস প্রকল্প সম্পর্কে এক্সেস প্রকল্প গ্লোবাল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রাম (জিএএফএসপি) উৎপাদনকারি সংগঠন (পিও)-এর নেতৃত্বাধীন ফান্ডিং উইন্ডো হতে অর্থায়ন করা হচ্ছে। এখানে উৎপাদনকারি সংগঠনগুলোকে তাদের এলাকায় ক্ষুদ্র কৃষকদের সেবা প্রদানে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে।

প্রকল্পটি এফএও, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এবং উৎপাদনকারি সংগঠনগুলোর জাতীয় পর্যায়ের শীর্ষ সংগঠন সারা বাংলা কৃষক সোসাইটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে, যারা ইতোমধ্যে পূর্ববর্তী  জিএএফএসপি  পাইলট প্রকল্পের অধীনে  মিসিং মিডল ইনিশিয়েটিভ (এমএমআই) প্রকল্প সফলভাবে এফএও-এর সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করেছে।

দু’টি জলবায়ু প্রতিপন্ন এলাকা উত্তরে বরেন্দ্র অঞ্চল এবং দক্ষিণে উপকূলীয় এলাকায় পণ্য-ভিত্তিক কৃষি ব্যবসার ক্লাস্টারগুলিতে গুরুত্ব দিয়ে  এমএমআই'র অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে অ্যাক্সেস প্রকল্প ক্রমান্বয়ে সম্প্রসারণ করা হবে। এটি এই অঞ্চলে ক্ষুদ্র কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবে যাতে তারা সংকট মোকাবেলায় আরও বেশি সহনশীল হয়।

এ সময় ক্ষুদ্র কৃষকদের প্রতিনিধি, সরকারি সংস্থা, বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি এবং উন্নয়ন অংশীদাররা এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রকল্পের সফলতায় তাদের সমর্থন এবং উৎসাহ প্রদানে অঙ্গীকার করেন।

তারেক

News